ভানুময় চন্দ ( আসাম ) : সীমান্ত টপকে আসামের পাথারকান্দির ভূবরিঘাটে প্রবেশ করে গরু চুরি করতে দিয়ে গণপ্রহারে হত তিন বাংলাদেশী চোর।চাঞ্চল্য।তদন্তে বোর্ডার এএসপি সহ হেড কুয়ার্টার ডিএসপি।সীমান্ত টপকে ভারতের করিমগঞ্জ জেলার পাথারকান্দি থানাধীন ভূবরিঘাট বাগানে প্রবেশ করে গরু চুরি করতে গিয়ে গ্রামবাসীর গণপ্রহারে মৃত্যু হল তিন বাংলাদেশি চোরের।এই মুহূর্তে এদের নাম জানা না গেলেও ওদের প্রত্যেকের বয়স ত্রিশ থেকে পঁয়ত্রিশ বছরের মধ্যে হবে বলে জানা গেছে। পুলিশ তদন্তে নেমে মৃতদের পরিচয় সম্পর্কে বিস্তর তথ্য আদায়ে সক্ষম না হলেও ওদের বাড়ি বাংলাদেশের সিলেটের জুরি উপজেলার জামকান্দিতে বলে প্রাথমিক তদন্তে ধারনা করছে।এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য স্থানীয় এলাকায়।পরে মৃতদেহগুলো উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য করিমগঞ্জের মর্গে পাঠিয়ে দিয়েছে।এ ঘটনায় এ সংবাদ সংগ্রহ পর্য্যন্ত অকুস্থলে দলবল নিয়ে উপস্থিত হয়ে জোর তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন বোর্ডার এএসপি প্রশান্ত দত্ত সহ সদর ডিএসপি শুধন্য শুক্লবৈদ্য ও পাথারকান্দির ইন্সপেক্টর ওসি তানবির আহমেদ।জানা গেছে গতকাল শনিবার গভীর রাতে একদল চোর পাথারকান্দির ভূরবিঘাট বাগানের দশ নং ওয়ার্ডের তেলেঙ্গাবস্তির রাজু তেলেঙ্গা নামের এক কৃষকের বাড়িতে প্রবেশ করে গরু চুরি করতে প্রচেষ্টা করে,কিন্তু সে সময় রাজু বাবুর সন্তানরা প্রকৃতির ডাকে বাহিরে ছিল,এবং তারা সাত আটজন লোককে রাতের অন্ধকারে চলাফেরা করতে দেখে হাল্লা চিৎকার করলে চোরেরা অবস্থা বেগতিক দেখে এই বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পর মুহূর্তে চোরের দলটি বস্তির নারায়ণ তেলেঙ্গা নামের অপর এক কৃষকের গোয়াল ঘরে প্রবেশ করতেই জেগে যান পরিবারের লোকেরা।তাদের হাল্লা চিৎকারে চোরের দল সেখান থেকেও পালিয়ে গিয়ে পাশের পাহাড়ি ছড়া ও জঙ্গলে আশ্রয় নেয়।ততক্ষনে ভিডিপি কর্মীদের তৎপরতায় পুরো বাগানের জনগন এগিয়ে এসে চোরদের খুজতে শুরু করেন।ভোর চারটে নাগাদ এদের মধ্যে তিন গরু চোর জঙ্গল থেকে বেরিয়ে জনবসতি স্থানে আসতে দেখে গ্রামবাসীরা এদের পাকড়াও করার চেষ্টা করেন।তখন গরু চোররা গ্রামবাসীদের হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে হাতে থাকা বেশকিছু ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে জনগনকে ঘায়েল করার প্রচেষ্টা চালায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।পরে শুরু হয় উভয় পক্ষের মধ্যে দস্তাদস্তি।এতে গ্রামবাসীদের গণপ্রহারে ঘটনাস্থলইে মৃত্যু হয় তিন বাংলাদেশি গরু চোরের।তবে ওদের বাকিরা সাঙ্গ পাঙ্গরা ভোর হবার আগেই রাতের অন্ধকারে সীমান্ত এলাকার কালভার্টের সুড়ুঙ্গ পথে বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় বলে জানা গেছে।উল্লেখ্য যে চলতি বছরের গত পহেলা জুন তারিখের রাতে ও তার আগেও অনুরূপ ভাবে পাথারকান্দি থানাধীন পুতনির পিপলাগোল ও বৈঠাখাল বাগানে গরু চুরি কান্ড সংঘটিত হয়। উক্ত কান্ডে তিন চোর ধরা পড়ে এবং এলাকাবাসীর গণ পিটুনিতে এক বাংলাদেশি গরু চোরের মৃত্যু হয়।পরে দুদেশের বিএসএফের উদ্যেগে বাংলাদেশ সরকার মৃত চোরের মরদেহ সমঝে নেয়।এ মর্মে জিপি সভাপতি অনিল ত্রিপাঠি জানান যে সীমান্ত এলাকা দিয়ে গরু পাচার ও চুরি নতুন ঘটনা নয়। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি জেলার পুলিশ সুপার এস কৃষ্ণা সীমান্ত এলাকার কিছু এলাকা পরিদর্শন করে জনগনকে অভয় বার্তা দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।এসব ঘটনায় স্থানীয় কৃষকরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।এদিকে বোর্ডার এএসপি প্রশান্ত দত্ত জানান যে চোরদের কাছ থেকে সেদেশের বিস্কুট কাপড় ডোর কাটার রশি ব্যাগ ইত্যাদি পাওয়া গেছে।এবং বিষয়টি সেদেশের বিডিআর কমান্ডারের নজরে আনা হয়েছে।আগামি বাহাত্তর ঘন্টা পর্য্যন্ত মরদেহগুলো মর্গে রাখা হবে।ডিএসপি শুধন্য বাবু জানান যে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।একি সাথে সীমান্ত সুরক্ষার বিষয়টি নিয়েও পুলিশ সুপারের সাথে আলোচনা চলছে।